উৎপাদন কমানোর ঘোষণায় বাড়ছে তেলের দাম

বিশ্বের বৃহত্তম তেল রফতানিকারক দেশগুলো উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে শুরু করেছে তেলের দাম। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের প্রতি ব্যারেলের দাম ১৫ শতাংশের বেশি বেড়ে হয়েছে ৮৪ ডলার।

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলছেন, তেলের উচ্চমূল্য বৃদ্ধির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। তবে আরএসি মনিটরিং গ্রুপ বলছে, বেশ কিছু দিন যদি তেলের দাম চড়া না থাকে তাহলে পেট্রোলের দাম বাড়ার আশঙ্কা কম।

সৌদি আরব, ইরাক ও কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ রবিবার প্রতিদিন দশ লাখ ব্যারেলের বেশি উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেওয়ার ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে রাশিয়াও ঘোষণা দিয়েছে, বছরের শেষ পর্যন্ত তারাও ৫ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমাবে।

জ্বালানি জায়ান্ট বিপি ও শেল জানিয়েছে, সোমবার তাদের তেলের দাম বেড়েছে। উভয় কোম্পানির দাম বৃদ্ধির হার ছিল ৪ শতাংশের বেশি।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের পর তেলের দাম বেড়েছিল। কিন্তু বর্তমানে যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যায়ে দাম চলে এসেছে।

তবে তেলের দাম কম রাখতে সরবরাহকারীদের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক মুখপাত্র বলেছেন, বাজারের অনিশ্চয়তার কারণে আমরা মনে করি এই মুহূর্তে উৎপাদন কমানো যৌক্তিক না, আমরা বিষয়টি স্পষ্ট করেছি।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উচ্চ মূল্যের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।

কেপিএমজি-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ালে সেলফিন সতর্ক বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ কঠিন হয়ে যেতে পারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে। তবে তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাসা-বাড়ির বিদ্যুতের দাম বাড়ার আশঙ্কা কম।

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহন খাতে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে আরএসি বলছে, স্বল্প মেয়াদে জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে এমন প্রভাব পড়ার আশঙ্কা কম।

তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেকপ্লাস সংস্থার তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো। বিশ্বের মোট অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৪০ শতাংশ এসব দেশের নিয়ন্ত্রণে।

সৌদি আরব প্রতিদিন ৫ লাখ এবং ইরাক ২ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল উৎপাদন কমিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, আলজেরিয়া এবং ওমানও কমাচ্ছে উৎপাদন।

সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, তেলের বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY